বেনাপোল প্রতিনিধি
২০২৫-২৬ অর্থবছরে বেনাপোল কাস্টমস হাউসের জন্য ৮ হাজার ৩৭০ কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। যা গত অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় এক
হাজার ৬৬৫ কোটি টাকা বেশি। সোমবার (২৮ জুলাই) দুপুরে কাস্টমস হাউস এই তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৩১৬.৫১ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ৬ হাজার ৭০৫ কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল, তবে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৭ হাজার ২১.৫১ কোটি টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪.৭২ শতাংশ বেশি।কাস্টমস কর্মকর্তারা জানান, আমদানি বিধিনিষেধ আরোপ করা সত্বেও, আমদানি কম হলেও কঠোর প্রয়োগ এবং ব্যবসায়ীদের সাথে সম্পৃক্ততার মাধ্যমে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এনবিআর আত্মবিশ্বাসী। বেনাপোল বন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল হক আনু জানান, এই বন্দর দিয়ে আমদানির পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে, যার ফলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা কঠিন হয়ে পড়েছে। আমরা সরকারের কাছে দ্রুুত পণ্য পরীক্ষা, মূল্যায়ন এবং দ্রুুত সরবরাহ নিশ্চিত করার আহবান জানাচ্ছি। ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক মতিয়ার রহমান বলেন, সরকারী রাজস্ব আদায়ে কাস্টমস কর্মকর্তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তবে, আয় বৃদ্ধি সত্বেও ব্যবসায়ীরা এখনও যথাযথ সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তিনি আরও বলেন যে কাস্টমস হাউসে প্রয়োজনীয় প্রাথমিক ব্যবহারের অভাবে অনেক ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। যদি এই সমস্যাগুলি সমাধান না করা হয়, তাহলে প্রত্যাশা অনুযায়ী রাজস্ব বৃদ্ধি করা কঠিন হবে। বেনাপোল কাস্টমস দেশের বৃহত্তম ¯’ল কাস্টমস হাউস, যা শিল্প কাঁচামাল, খাদ্যদ্রব্য, প্রসাধনী, ইলেকট্রনিক্স এবং পোশাক কাঁচামাল সহ আমদানিকৃত ভারতীয় পণ্য থেকে রাজস্বের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ সংগ্রহ করে। যদি সমাধান না করা হয়, তাহলে রাজস্ব বৃদ্ধি করা কঠিন হবে, স্টেক হোল্ডাররা বলছেন। বেনাপোল ¯’লবন্দরের ডেপুটি ডিরেক্টর মামুন কবীর তরফদার বলেন, বেনাপোল বন্দর দিয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১৫ লাখ ৮১ হাজার ৯৫৪.২৪ টন পণ্য আমদানি করা হয়েছিল। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভারত থেকে ১৫ লাখ ৩৪ হাজার ৩৪০.২১ টন পণ্য আমদানি করা হয়েছিল। ৪৭,৬১৪ টন পণ্য কম আমদানি করা হয়েছিল। আমদানি কম হলেও, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় করা হয়েছিল। রাজস্ব ফাঁকি রোধে কাস্টমস কর্মকর্তাদের কঠোর নজরদারি এবং সঠিক কর ব্যব¯’ার কারণে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হয়েছে। বেনাপোল কাস্টম হাউসের অতিরিক্ত কমিশনার মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, রাজস্ব ফাঁকি রোধে কাস্টমস হাউসে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করায় শুল্ক ফাঁকির প্রবণতা কমে গেছে। কোনো অনিয়ম ধরা পড়লে রাজস্ব আদায়সহ কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এছাড়া শূন্য সহনশীলতা নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, বাণিজ্য সহজীকরণ, অটোমেশন এবং কঠোর পর্যবেক্ষণে রাজস্ব বৃদ্ধির প্রচেষ্টা সম্পর্কে আমরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছি।