নোয়াখালীতে বন্দোবস্তের পাঁচগুণ জায়গা অবৈধভাবে দখল
মোঃরিয়াজুল সোহাগ, জেলা প্রতিনিধি নোয়াখালীঃ
চান্দিনা ভিটি বন্দোবস্ত নিয়ে দোকানঘর নির্মাণ, পরবর্তীতে বন্দোবস্তের চার থেকে পাঁচগুণ জায়গা অবৈধভাবে দখলে নিয়ে বিল্ডিং কোড না মেনেই গড়ে তোলা হচ্ছে বহুতল ভবন। এভাবেই বেহাত হয়ে যাচ্ছে গণপূর্ত বিভাগের সরকারি হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি। প্রশাসনের নাকের ডোগায় এসব অবৈধ দখল কর্মযজ্ঞ চললেও আইনি কোন বেগ পেতে হচ্ছে না দখলদারদের। সরকারি জায়গার জলাশয়, খাল ও ড্রেন দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ এসব স্থাপনার কারণে শহরজুড়ে তৈরী হয়েছে স্থায়ী জলাবদ্ধতাসহ নানা সমস্যা। এই সমস্যা সমাধানে দ্রুত
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে দু-একটি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করা হলেও বছরের পর বছর প্রভাবশালীদের চত্রছায়ায় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা এসব স্থাপনা উচ্ছেদে রহস্যজনক ভাবে কোন কার্যক্রম পরিচালনা নজরে আসেনি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের কর্তব্যক্তি ও প্রভাবশালীদের মোটা অংকের বিনিময়ে ম্যানেজ করে সরকারের কোটি কোটি টাকার এসব সম্পত্তি দখলে নিয়েছে প্রভাবশালী দখলদাররা জেলা শহরে বন্যা ও জলাবদ্ধতার মতো ভয়াবহ পরিস্থিতির তৈরী হয়। মানবসৃষ্ট এসব সমস্যা সমাধানে দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।
জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন খান বলেন, গত ১৫-২০ বছরে শহরের বেশিরভাগ সরকারি জায়গা, জলাশয় ও খালগুলো দখল করে নিয়েছে একটি প্রভাবশালী মহল। যার কারণে এখানে স্থায়ী জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। সরকারি এসব জায়গা থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে জলাশয় উন্মুক্ত ও খালগুলোর পানির গতিপথ সচল করার এখন সময় এসেছে। আশা করছি বর্তমান প্রশাসন এব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করে নোয়াখালী শহরের সৌন্দর্য রক্ষা এবং জলাবদ্ধতা নিরসনে ভূমিকা রাখবে।
ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে প্ল্যান পাসের বিষয়ে নোয়াখালী পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সুজিত বড়ুয়া বলেন, পৌর এলাকায় যেহেতু মানুষের বসবাসের গণত্¦ রয়েছে, সেই ক্ষেত্রে এখানে প্ল্যান পাস ছাড়া প্রত্যেকটি বিল্ডিংই ঝুঁকিপূর্ণ। জেলা শহরের প্রধান সড়কের পশ্চিম পাশের চান্দিনা ভিটিতে ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে প্ল্যান অনুমোদন দিতে গণপূর্ত বিভাগের পক্ষ থেকে আমাদেরকে চিঠি নিয়ে নিষেধ করা হয়েছে। এছাড়া ভবন নির্মাণের সময় ভিটির মালিকরাও আমাদের সঙ্গে কোন ধরনের যোগাযোগ করেনি।
গণপূর্ত বিভাগ নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কামরুল হাসান বলেন, শহরের সোনালী ব্যাংক থেকে বকস্ মিজির পোল পর্যন্ত যে চান্দিনা ভিটি হিসেবে ৬৫ ফুট বন্দোবস্তের কথা বলা হচ্ছে সেগুলোর কাগজপত্রও সঠিকভাবে নেই। তারমধ্যে নোয়াখালী ফোরলেন সড়ক বাস্তবায়নের জন্য ব্যবসায়ীদের দখলকৃত জায়গা থেকে ২৪ ফুট জায়গা অবকাঠামোর ক্ষতিপূরণ দিয়ে অধিগ্রহন করা হয়েছে। কিন্তু দেখা গেছে অনেকেই তাদের দোকানের পিছনের অংশে অনেক জায়গা অবৈধভাবে দখল করে নিয়েছে।
সরকারি জায়গা থেকে অবৈধ এসব স্থাপনা কেন উচ্ছেদ করা হচ্ছে না এমন প্রশ্নে এই কর্মকর্তা বলেন, আমাদের কোন ম্যাজিস্ট্রিসি পাওয়ার নেই। জেলা প্রশাসন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করলে আমরা অভিযান করতে পারি। কবে নাগাদ এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে এমন প্রশ্নে মো. কামরুল হাসান বলেন, আমরা সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করে অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদের জন্য আগামী এক মাসের মধ্যে জেলা প্রশাসন বরাবর চিঠি লিখবো। জেলা প্রশাসন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করলেই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।
জেলা প্রশাসক খন্দাকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, সরকারি জায়গা ও খাল দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে আমাদের কার্যক্রম চলমান আছে। শীঘ্রই শহরের প্রধান সড়কের পশ্চিম পাশের অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করে সরকারি জায়গা উদ্ধার করা হবে।
Comment / Reply From
You May Also Like
Popular Posts
Newsletter
Subscribe to our mailing list to get the new updates!