আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার আলমগীর অন্যতম আলোচিত নাম হয়ে উঠেছেন। মাঠের রাজনীতি, তৃণমূলের জনসম্পৃক্ততা ও জনমতের বিচারে তিনিই এখন এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছেন বলে স্থানীয় দলীয় সূত্র ও বিশ্লেষক মহলের মত।
সরোয়ার আলমগীর শুধু রাজনীতিবিদ নন, তিনি মানবিকতায়ও অনন্য। ফটিকছড়ির বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদ্রাসা, মন্দির এবং সামাজিক সংগঠনের পাশে দাঁড়ানো তার দীর্ঘদিনের অভ্যাস। গরিব-অসহায়দের চিকিৎসা, শিক্ষার্থী ও এতিম শিশুদের সহায়তা, দরিদ্র পরিবারের বিয়ের খরচ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতায় তিনি নিয়মিত অনুদান দিয়ে থাকেন। ব্যক্তিগতভাবে শিল্পপতি না হয়েও মানবিকতার জায়গা থেকে বিভিন্ন এলাকার অসংখ্য দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি ‘দানবীর নেতা’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। তার এই উদারতা এবং সহানুভূতির মনোভাব তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত প্রশংসিত হচ্ছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ফটিকছড়ি আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী রয়েছেন প্রায় ১২ জন। এর মধ্যে জেলা বিএনপির নেতা সরোয়ার আলমগীর, উপজেলা বিএনপি-র আহ্বায়ক, অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা আজিম উল্লাহ বাহার, কেন্দ্রীয় নেতা বিচারপতি ফয়সাল মাহমুদ ফয়েজী ও তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী আলোচনায় রয়েছেন। তবে মাঠের উপস্থিতি, পরিচ্ছন্ন ইমেজ ও জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছেন সরোয়ার আলমগীর।
বিএনপির ঘনিষ্ঠ নেতারা জানিয়েছেন, সরোয়ার আলমগীর দীর্ঘ ১৬ বছরের বেশি সময় ধরে আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় রয়েছেন। তিনি স্থানীয় অপরাধ, চাঁদাবাজি ও বন-ডাকাতির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে প্রতিবাদ জানিয়ে আলোচনায় আসেন। ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানের পক্ষে তার স্পষ্ট অবস্থান এবং সরকারবিরোধী কর্মসূচিতে দৃঢ় অংশগ্রহণ তাকে আলাদা পরিচিতি এনে দিয়েছে।
স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, তিনি ইফতার মাহফিল, দোয়া অনুষ্ঠান এবং কর্মী-সমর্থকদের বিভিন্ন আয়োজনে নিয়মিত অংশ নেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানে সহায়তা দিয়ে ইতিমধ্যে জনমানসে মানবিক ও কর্মীবান্ধব নেতা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন।
এদিকে, সম্প্রতি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও মনোনয়নপ্রত্যাশী বিচারপতি ফয়সাল মাহমুদ ফয়েজী সরোয়ার আলমগীরকে ফটিকছড়ির সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা বলে মন্তব্য করলে স্থানীয় রাজনীতিতে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়।
বিএনপির মনোনয়ন প্রক্রিয়া বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, এ আসনে তিনটি বিষয়কে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে—গণতন্ত্র সংগ্রামে ত্যাগের ইতিহাস, সততা ও পরিষ্কার ইমেজ এবং তৃণমূলে জনপ্রিয়তা। এই তিন মাপকাঠিতে সরোয়ার আলমগীর এগিয়ে রয়েছেন বলে স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীরা মনে করছেন।
স্থানীয় এক কর্মী বলেন, ‘সরোয়ার ভাই মাঠের মানুষ। সুখে-দুঃখে কর্মীদের পাশে থাকেন। তাঁকে মনোনয়ন দিলে বিজয় সহজ হবে।’
পাশাপাশি, দলীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের শক্ত অবস্থান, দলীয় ঐক্য এবং স্থানীয় জনমতের অবস্থানকেও গুরুত্ব দিচ্ছে বিএনপির হাইকমান্ড।
শক্তি: বিচ্ছিন্ন অপরাধের বিরুদ্ধে অবস্থান, কর্মী-বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব, জনসংযোগে স্বচ্ছতা।
দুর্বলতা: কেন্দ্রীয় মর্যাদার সীমাবদ্ধতা, মনোনয়নপ্রক্রিয়ায় উচ্চ প্রতিযোগিতা।
সুযোগ: তরুণ নেতৃত্বের উদ্ভব, দলে পুনর্গঠন এবং জনমতের সম্মান।
হুমকি: মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে বিভাজন, প্রতিদ্বন্দ্বীদের প্রভাব।
এ প্রসঙ্গে সরোয়ার আলমগীর বলেন, ‘ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানের মুখে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলেন। আবারও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে জনতার বিজয় নিশ্চিত হবে।’
এখন দেখার বিষয়, তৃণমূলে জনপ্রিয় এই নেতার ভাগ্যে দলীয় মনোনয়ন জুটে কিনা।